ShariatpurCity
দুর্নীতি ও অন্যায় • 16 Sep 2025

বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে পিচ ঢালাই

বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে পিচ ঢালাই
এক দিকে আকাশ থেকে অনবরত ঝরছে বৃষ্টি, আর অন্যদিকে বৃষ্টিভেজা সড়কেই চলছে কার্পেটিং। বৃষ্টিতে সড়কে দেওয়া প্রাইমকোর্ট ধুয়ে গেলেও, যেন সেদিকে কোনো দৃষ্টি নেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও দায়িত্বে থাকা এলজিইডির লোকদের। গত দুইদিন সকালে শরীয়তপুরের একটি গ্রামীণ সড়কে এমন অবস্থার মধ্যেই হয়েছে পিচ ঢালাইয়ের কাজ হয়েছে। এতে অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কটি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, নিয়ম মেনেই কাজ করছেন তারা। আর বিষয়টি অবগত হয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী। এলজিইডি সূত্র জানায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের চর সোনামুখী দাড়িয়া বাড়ি থেকে পশ্চিম সোনামুখী পর্যন্ত এক হাজার ৮০০ মিটার সড়কটি সংস্কার করার জন্য ৮৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। রাজিব হোসেন নামের স্থানীয় এক ঠিকাদার কাজটি করছেন। স্থানীয়রা জানান, সড়কটিতে শুরু থেকেই অনিয়ম করে আসছেন ঠিকাদারের লোকজন। সড়কটির দুপাশে (এজিং) বেশ কিছু স্থান এবং খোয়ায় নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে ঢালাইয়ের জন্য সড়কে প্রাইমকোর্ট দেওয়া হয়। তবে সেটি বৃষ্টিতে ধুয়ে গেলেও নতুন করে আর প্রাইমকোর্ট দেওয়া হয়নি। তাছাড়া গত দুইদিন (শনিবার ও রোববার) ধরে সকালে বৃষ্টির মধ্যেই সড়কে পিচ ঢালাইয়ের (কার্পেটিং) কাজ হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হওয়ায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে হওয়া বৃষ্টির মাঝেই চলছে কার্পেটিং। শ্রমিকরা বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে ঢালাই কাজ চালু রেখেছেন। সড়কের পাশে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় সেগুলো বেলচার সাহায্যে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এরপর সেই স্থানেই পিচ ঢালাই দিচ্ছেন তারা। তাছাড়া সড়কে দেওয়া প্রাইমকোর্ট বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাড়িয়া বলেন, গত দুইদিন সকালে বৃষ্টির মাঝেই শ্রমিকরা ভিজে ভিজে সড়কে পিচ ঢালাইয়ের কাজ করেছেন। তাছাড়া বৃষ্টিতে প্রাইমকোর্ট ধুয়ে গেলেও সেই অবস্থায় কাজ করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় রাস্তায় পানি জমে আছে। এভাবে যদি অনিয়ম করে সড়কে কাজ করা হয় তাহলে এই সড়ক বেশিদিন টিকবে না। আমরা চাই বৃষ্টির মধ্যে কাজ বন্ধ রেখে নতুন করে প্রাইমকোর্ট দিয়ে আবার খরার মধ্যে কাজ করা হোক। স্থানীয় বাসিন্দা হাসান আলী বলেন, রাস্তার দুপাশে আর খোয়ার কিছু কিছু জায়গায় পচা ইট ব্যবহার করেছে ঠিকাদার। তখন আমাদের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তবে তারা আমাদের কথা শোনেনি। এবার তারা বৃষ্টির মধ্যে পিচ ঢালাই করেছে। অনেক জায়গায় তো পানিও জমা ছিল। এভাবে নয়-ছয়ভাবে কাজ করলে আমাদের এই সড়কটি মজবুত হবে না। দায়িত্বে থাকা সদর উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের কার্য সহকারী শরীয়তউল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। একপর্যায়ে তিনি ছাতার সাহায্যে মুখ লুকিয়ে সামনে চলে যান। যদিও পরবর্তীতে তিনি কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন শ্রমিকদের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করে ঠিকাদার রাজিব হোসেন বলেন, বৃষ্টির মধ্যে কোনো কাজ হয়নি। আর যেটুকু সময় কাজ হয়েছে তা নিয়ম মেনেই হয়েছে। জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রাফেউল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, বৃষ্টির মধ্যে কাজ করলে সেটি টেকসই হবে না। আমরা খবর পেয়ে ঠিকাদারকে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। রোদ না ওঠা পর্যন্ত কাজ চালু করা যাবে না। আর আগের কাজ সংশোধন শেষে নতুন কাজ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।

মন্তব্য (0)

এখনও কোন মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

Install Our App

For the best experience, install our app on your device.